করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এখনই এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে না বলে ঘেষণা দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তীতে তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে দলের শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছেন।
গতকাল বিকালে অনুষ্ঠিত হওয়া গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এক প্রসঙ্গক্রমে তিনি একথাগুলো ব্যক্ত করেন। বৈঠকে উপস্থিত বোর্ডের একাধিক সদস্য দৈনিক শিক্ষার আলো’কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, উক্ত বোর্ডের সভায় এখনই এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন দলটির প্রবীণ নেতা কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, সবকিছুই বর্তমানে স্বাভাবিকভাবে চলছে। তিনি আরও বলেন, এখন এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।
ড. আবদুর রাজ্জাকের এই প্রস্তাবের সাথে একমত হন নি অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাককে উদ্দেশ্য করে বলেন, এখনই পরীক্ষা নিতে হবে যৌক্তিকতা কী? কলেজ তো চলছে না। আমি সামগ্রিক দিক বিবেচনা করে কাজ করি। ইউরোপ-আমেরিকা, ভারতে এখন করোনার অবস্থা কেমন? ওরা ভেবেছিল শীঘ্রই কমে যাবে। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় আবার বিশাল ধাক্কা দিচ্ছে। আমাদের দ্বিতীয় দফায় করোনা আসতে পারে সামনে। কাজেই এখনই এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করার চিন্তাভাবনা করছি না। যখন সময় হবে তখন আমি বলে দেব। আর স্কুল কলেজও এখন খোলা উচিত না। সবকিছু ভেবে চিন্তে ঠান্ডামাথায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সভায় প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান করোনা নিয়ে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে বলেন, এখন করোনা নিউজপেপারগুলোতে অনেক লেখালেখি হচ্ছে। কেউ কেউ বিভিন্নভাবে সোয়ান মিডিয়ায় সমালোচনা করছে। বিষয়টি কঠোরভাবে দেখা হবে। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে মনে রাখতে হবে এখন আমরা সবাই একটা যুদ্ধকালীন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি। যারা সমালোচনা করেন, করতেছেন, লেখালেখি করেন তাদের একটু ভেবে চিন্তে সমালোচনা করা উচিত।
বৈঠক সূত্র আরও জানায় যে, তৃণমূল থেকে পাঠানো বিভিন্ন তালিকায় জেলা-উপজেলা অথবা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি-ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কেন তা জানতে চান আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। তিনি এসব জায়গায় যতদ্রুত সম্ভব সম্মেলন করার তাগিদ দেন। একই সঙ্গে দলে যেন অনুপ্রবেশ না হয় সেদিকে খেয়াল সবাইকে সতর্ক করেন তিনি। করোনাকালে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তাদের সঠিক মূল্যায়নের নির্দেশ দেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে বিভিন্ন উপকমিটি এবং সহযোগী সংগঠনের কমিটিগুলো দ্রুত যাচাই-বাছাই শেষ করে ঘোষণা করতে তাগিদ দেন তিনি।
আওয়ামী লীগ চেয়ারপার্সন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় বোর্ডের প্রেসিডিয়াম সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, ড. আবদুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ উপস্থিত ছিলেন।বিকাল ৪টায় শুরু হয়ে এই সভা চলে সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিট পর্যন্ত।
Discussion about this post